৩টি আসল কারণ যেগুলো আটকাচ্ছে আপনার Fat Loss জার্নি

ওজন কমিয়েছেন? মাংসপেশী তৈরি করেছেন? ডায়েট আর জিমও চলছে ঠিকঠাক। তবুও কেন নিয়মিত জিম রুটিন আর যথেষ্ট পরিষ্কার খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার পরও শেষের সেই বাড়তি মেদটা যাচ্ছে না? জিম + ডায়েট ঠিক থাকলেও কারণ হতে পারে এমন কিছু, যেগুলোকে আমরা প্রায়ই গুরুত্বই দিই না।

৩টি আসল কারণ যেগুলো আটকাচ্ছে আপনার Fat Loss জার্নি:

১। ঘুম

প্রায়ই আমরা কাজ শেষ করতে, দেরিতে ব্যায়াম করতে বা একান্ত সময় কাটানোর জন্য ঘুম ত্যাগ করি। সপ্তাহান্তে হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে দেরি করে বাইরে থাকি। সামাজিক জীবন অবশ্যই স্বাস্থ্য রুটিনের অংশ, তবে শোবার রুটিনে ধারাবাহিকতা অসংখ্য উপকার বয়ে আনে। প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা, তবে আদর্শভাবে ৮–৯ ঘণ্টা ঘুম শরীর ও মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে, পুনরুদ্ধার করে এবং কাজের ক্ষমতা বাড়ায়। ঘুম কেবল মেদ কমাতেই নয়, বরং মাংসপেশী বৃদ্ধিতেও সমানভাবে সহায়ক। মনে রাখবেন, চর্বি কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আসলে মাংসপেশী বৃদ্ধি করা।

২। মানসিক চাপ

চাপ সবসময় খারাপ নয়, টিকে থাকার জন্য এটা জরুরি, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ দূর করা দরকার। আগে চাপ মানে ছিল শিকারির হাত থেকে বাঁচা, আর এখন একটা ইমেইল বা স্ল্যাক মেসেজও আমাদের হুমকি মনে হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ শরীরে নানা রোগ সৃষ্টি করতে পারে যেমন: অটোইমিউন ডিজঅর্ডার, হৃদরোগ, ক্যান্সার ইত্যাদি। কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন), কিডনির ওপরে অবস্থিত অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়। এটি শরীর কীভাবে কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, প্রোটিন ব্যবহার করবে তা নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তচাপ, রক্তে শর্করা, ঘুম–জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। কিন্তু কর্টিসলের মাত্রা বেশি হলে (অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে) শরীরের এই ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৩। হরমোনের স্বাস্থ্য

আজকাল হরমোন স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা বাড়ছে— আর এর যথেষ্ট কারণ আছে। পুরুষ বা নারী— উভয়ের ক্ষেত্রেই হরমোনের অসামঞ্জস্যতা নানা সমস্যার জন্ম দিতে পারে। তবুও শরীরে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে আমরা হরমোনকে সচরাচর প্রথমে গুরুত্ব দিই না। টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন এবং থাইরয়েড হরমোনের সঠিক মাত্রা জানা অত্যন্ত জরুরি। এগুলো শুধু নারী বা পুরুষ বিশেষে সীমাবদ্ধ নয়— সবার ক্ষেত্রেই ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। এজন্য একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করা ভালো।নিয়মিত হরমোন পরীক্ষা করাবেন। সঠিক হরমোন ভারসাম্য শুধু ফ্যাট লস নয়, সার্বিক জীবনশক্তি ফিরিয়ে আনে। রক্ত পরীক্ষা করার সময় রুটিন একই রাখার চেষ্টা করবেন। সাধারণত সকালে খালি পেটে, ব্যায়াম করার আগে পরীক্ষা করানো সবচেয়ে সঠিক ফল দেয়। এতে শরীরের স্বাভাবিক অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়া বা ইস্ট্রোজেনের আধিক্য শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমা ছাড়াও শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যার কারণ হতে পারে।

শেষ কথা: এই তিনটি বিষয়— ঘুম, মানসিক চাপ আর হরমোনের স্বাস্থ্য— দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবন গঠনে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মেদ কমাতেও বড় ভূমিকা রাখে। তাই যদি আপনি ফিটনেসের মৌলিক নিয়মগুলো মেনে চলেও কাঙ্ক্ষিত ফল না পান, তবে এগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *